সিলেটের কানাইঘাটে লোভাছড়া পাথর কোয়ারীতে বারকি নৌকা থেকে চাঁদাবাজির ঘটনায় কানাইঘাট থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত ৩ জনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ মে) গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।
বারকি নৌকা থেকে চাঁদাবাজির ঘটনায় লোভাছড়া লোড-আনলোড শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য মোঃ আলী বাদী হয়ে সোমবার (১২ মে) কানাইঘাট থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামী করে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন।আটককৃতরা হলো- সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার গাবুরগাঁও গ্রামের আব্দুল কাহারের পুত্র আব্দুল্লাহ (২২), কানাইঘাটের দুয়ারিমাটি গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের পুত্র মোঃ সাইফ (২২) ও ডাউকেরগুল গ্রামের ফরমান আলীর পুত্র সাবেক শ্রমিকদল নেতা তায়েফ উদ্দিন (৫৫)।এছাড়া পাশাপাশি যাদের নির্দেশে বারকি নৌকা থেকে লোভাছড়া কোয়ারীর বাগান-বাগিচার ঘাটে পাথর বোঝাই বারকি নৌকা ও পাথর শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির নির্দেশদাতা চোরাকারবারী জকিগঞ্জ উপজেলার সোনাসার গ্রামের আব্দুল মজিদ পাখি মিয়ার পুত্র মাসুম আহমদ (চুইস মামুন), কানাইঘাটের সাতপাড়ি গ্রামে আরববলীর পুত্র বর্তমান ইউপি সদস্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মঈনুল হক (গরু মঈনুল), একই গ্রামের আতাউর রহমান আতার পুত্র জয়নাল আবেদীন, কোয়ারী এলাকার ডাউকেরগুল গ্রামের মজিদ সিদ্দিকীর পুত্র উপজেলা বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক জাকারিয়া সিদ্দীকি (লিটন মিয়া), সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার কালারুকা গ্রামের গোলাম আযমকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার বাদী মোঃ আলী এজাহারে উল্লেখ করেনে- মামলার আসামীরা চোরাকারবারী ও চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাস প্রকৃতির লোক। তারা গত কয়েকদিন থেকে লোভাছড়া পাথর কোয়ারী থেকে এলাকার হতদরিদ্র লোকজন কর্তৃক অবৈধভাবে বারকি নৌকা দিয়ে উত্তোলনকৃত পাথরের নৌকা থেকে প্রকাশ্যে জোরপূর্বক চাঁদাবাজি করে আসছিল।সোমবার পাথরবাহী নৌকা থেকে প্রকাশ্যে একটি সংঘবদ্ধ চক্র চাঁধা আদায় কালে পাথর শ্রমিকরা কানাইঘাট থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ বিকেল সাড়ে ৩টায় লোভাছড়া কেয়ারীর বাগন-বাগিচা ঘাটে গিয়ে পাথরবাহী নৌকা থেকে চাঁদা আদায়কালে ৩ জনকে হাতেনাতে আটক করলেও বেশ কয়েকজন পালিয়ে যায়।এদিকে কোয়ারী থেকে এলাকার হতদরিদ্র কিছু শ্রমিকরা কর্তৃক সিঙ্গেল পাথর সংগ্রহ করে বারকি নৌকা দিয়ে পরিবহনের নৌকা থেকে চাঁদাবাজির ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে গত সোমবার রাতে কোয়ারী এলাকার কান্দলা নয়াবাজারে এলাকার সর্বস্তরের পাথর শ্রমিক ও বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীরা মিছিল করেন। তারা ৩ চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান এবং চাঁদাবাজির ঘটফাদারদের দ্রত আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানান।
তারা বলেন, গত কয়েকদিন আগে কোয়ারী এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে থানার এক পুলিশ সদস্যকে বারকি নৌকা থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে হেনস্থা ও অপহরণ করেছিল তাদেরই লোক সোমবার বারকি নৌকা থেকে চাঁদাবাজির সময় হাতে-নাতে আটক হয়েছে।
থানার ওসি আব্দুল আউয়াল জানিয়েছেন, চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেফতার তিন জনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং মামলার অন্যান্য আসামীদের আটক করতে পুলিশের অভিযান চলছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতে পুলিশ রিমান্ড চাওয়া হবে বলে তিনি জানান।
স্থানীয় পাথর শ্রমিকরা জানান- লোভাছড়া কোয়ারী এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর কর্র্তক জব্দকৃত পাথরের ৪৫ লক্ষ ঘনফুট পাথর নিলামে সিলেটের পিয়াস এন্টারপ্রাইজ নিলাম নেয়। সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ তাদেরকে নিলামকৃত পাথর বুঝিয়ে দেয়। যারা বারকি নৌকা থেকে চাঁদাবাজি করছিল তারা পিয়াস এন্টারপ্রাইজের নিয়োগপ্রাপ্ত লোক নিয়োগ বলে পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ জানায়।